
শেখ সাদী সুমন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে মিশরের ঐতিহাসিক আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ১০ জন কৃতি শিক্ষার্থী। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ এই ইসলামিক বিদ্যাপীঠে তারা পূর্ণাঙ্গ সরকারি বৃত্তি (ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ) নিয়ে বিভিন্ন অনুষদে অধ্যয়নের সুযোগ লাভ করেছেন।
সম্প্রতি মিশর সরকারের পক্ষ থেকে এই স্কলারশিপের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১০ জন মেধাবীর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। এই বৃত্তি প্রাপ্তির ফলে তাদের সম্পূর্ণ টিউশন ফি, আবাসন এবং মাসিক বৃত্তিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বহন করবে মিশর সরকার।
মেধাবীদের স্বপ্নপূরণ
আল-আজহারের এই স্কলারশিপ শুধু ধর্মীয় শিক্ষায় নয়, আধুনিক বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন বিভাগেও পড়ার সুযোগ দেয়। এই ১০ জন শিক্ষার্থী মূলত ইসলামিক স্টাডিজ, আরবি ভাষা ও সাহিত্য এবং সংশ্লিষ্ট মানবিক বিষয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবেন।
বৃত্তিপ্রাপ্ত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, “আল-আজহারের মতো বিশ্বমানের একটি প্রতিষ্ঠানে আমার সন্তান পড়াশোনার সুযোগ পাওয়ায় আমরা গর্বিত ও আনন্দিত। এতে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার মান আন্তর্জাতিক মহলে আরও প্রশংসিত হবে।”
শিক্ষাবিদদের প্রত্যাশা
শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, এই শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা লাভ করে দেশে ফিরে এলে তারা দেশের শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে। এটি বাংলাদেশের মাদ্রাসা ও সাধারণ শিক্ষাধারার শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশাল অনুপ্রেরণা, যা তাদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্নকে প্রসারিত করবে।
ঐতিহ্যগতভাবে, আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় মুসলিম বিশ্বের জ্ঞানচর্চা ও মতাদর্শের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই শিক্ষার্থীরা সেখানে পড়াশোনা করে দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সফল শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেছেন। মাওলানা খলিলুর রহমান আজহারি
অভিমত — আমরা আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। গত বছর যেখানে বাংলাদেশের ৪০ জন শিক্ষার্থী ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পেয়েছিল, এবার সেই সংখ্যা বেড়ে ১১৯-এ পৌঁছেছে। এই অগ্রগতি নিঃসন্দেহে আনন্দের।
আমাদের রাষ্ট্রপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্যারের ভূমিকাও এখানে উল্লেখযোগ্য। শায়খুল আজহারের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ ও ইতিবাচক সম্পর্ক বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। সামনে যারা দেশের নেতৃত্বে আসবেন, তারাও যেন আল-আজহারের সঙ্গে এমনই সুসম্পর্ক বজায় রাখেন—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
© All rights reserved © 2023
Leave a Reply