
স্টাফ রিপোর্টার হুমায়ুন রশিদ জুয়েল:
জুলাই আন্দোলনের এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও, কিন্তু অত্যন্ত হৃদয়বিদারক, পরিতাপের বিষয়, আন্দোলনের সময় ত্রিমুখী হামলায় আহত দৈনিক যুগান্তরের কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা প্রতিনিধি মুকরামিন খান স্বাধীনের কোনো খোঁজ নেওয়া হয়নি। তার প্রতি রাষ্ট্র কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কারও পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আন্দোলনের সময় সে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়ে আহত হয়েছিলেন, তার নাম পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত আহতদের তালিকায় স্থান পায়নি।
সেই সময় ইন্টারনেট না থাকা অবস্থায়ও আন্দোলনের খবর ও ছবি ঢাকা কিংবা অন্যান্য স্থানে পাঠিয়েছেন যুগান্তরের তাড়াইল উপজেলা প্রতিনিধি মুকরামিন খান স্বাধীন। ৪ আগষ্টে আহত হওয়ার সংবাদটি ৫ আগষ্টে যুগান্তরে প্রকাশিতও হয়েছে। তিনিই ছিলেন সংবাদ সংগ্রহের সম্মুখসারির যোদ্ধা। তবে এখনো কেউ তার মূল্যায়ন করেনি। সে আঘাত নিয়ে চলাফেরা করছেন, কাজও করছেন।
সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর ৪ আগস্ট সাংবাদিক মুকরামিন খান স্বাধীন তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি মারধরের শিকার হন। তখন তার ফোনটা কেড়ে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভিডিও ডিলেট করে ফেলা হয়। এসব বিষয়াদি স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের ওষুধ ফার্মেসির লোকজন। তারা বলেন, তাড়াইলে হামলার শিকার আহত সাংবাদিক মুকরামিন খান স্বাধীনের আজ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ তার খোঁজ নেয়নি, যোগাযোগও করেননি। তার চিকিৎসা খরচও সরকার দেয়নি। তিনি বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিজের টাকায় চিকিৎসা করিয়েছেন।
সাংবাদিক মুকরামিন খান স্বাধীন অভিযোগ করে বলেন, হামলার পর সে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেননি। কারণ, তখন সেখানে আহত মানুষের ভিড় ছিল। তিনি ছোটখাটো চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। তার কাছে সেসব চিকিৎসার কাগজপত্র নেই। তবে শরীরে আঘাতের চিহ্ন এখনো আছে। তার পরনের জামা ছিঁড়ে যায়। তার শরীর থেকে রক্ত ঝরতে দেখা গেছে।
সাংবাদিক মুকরামিন খান স্বাধীন বলেন, আমরা সাংবাদিকরা আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলির মুখোমুখি সরকারদলীয় লোকদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে কাজ করেছি। অনেকবার মার খেয়ে গুরুতর আহত হয়েছি। কিন্তু কেউ আমার কথা বলে না। এক বছর পার হলেও কেউ খোঁজ নেয়নি। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধান করে সব আহত সাংবাদিকদের প্রাপ্য সম্মান ও সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত। জুলাই আন্দোলন তখনই সফলতা আসবে ।
© All rights reserved © 2023
Leave a Reply