শেখ সাদী সুমন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ০৬ জুন রোজ বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে কলেজপাড়ায়। নির্বাচন শেষে ব্রাক্ষবাড়িয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহাদাত হোসেন শুভন বিজয় হওয়ার পরে শাহাদাত হোসেন শোভনের আনন্দ মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে কলেজ ছাএ আশরাফুল রহমান ইজাজকে হত্যার ঘটনায় হাসান আল ফারাবী জয়কে ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোরে নেএকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলা কুতুবপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের একটি ঝোঁপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। শনিবার দুপুরে ১২ টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সম্মান সংবাদ সম্মেলনে শাখাওয়াত হোসেন এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্ন জবাব দেন। তিনি বলেন গত বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে শহরে মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের (আনারস প্রতীক) বিজয় হওয়ার খবরে বিজয় মিছিল বের করে। মিছিলটি কলেজপাড়া এলাকার খান টাওয়ারের সামনে আসলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আশরাফুর রহমান ইজাজ গুলিবিদ্ধ হয়।একটি ভিডিও তে দেখা যায় হাসান আল ফারাবি জয় তাকে গুলি করে কোমরে পিস্তল রেখে ঘটনাস্থল থেকে সরে যাচ্ছে। এ সময় তার বন্ধুরা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে এ নিয়ে আসলে কর্তব্যরত তো চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। এ ঘটনার পরে গুলি করা জয় তার ভিডিও নেট দুনিয়া ভাইরাল হয়ে যায় পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের পিতা হাজী আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০ঃ১৫ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর একটি বিশেষ টিম সদর থানা পুলিশ উজ্জ্বলা শাখার দল অভিযান পরিচালনা করে শুক্রবার ভোরে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে একটি বাড়ি থেকে হাসান আল ফারাবী জয়কে গ্রেফতার করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের আরো বলেন গ্রেফতারের পরে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধারে কিশোরগঞ্জ ভৈরব নরসিংদী আশুগঞ্জ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে শুক্রবার রাত্র সোয়া ১১ টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামে একটি ব্রিজের পাশের ঝোপের মধ্যে থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা। গ্রেফতারের পরে হাসান আল ফারাবি জয় পুলিশ এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে হত্যাকাণ্ডের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। হাসান আল ফারাবী তার স্বীকারোক্তিতে বলেন পূর্ব বিরোধের জের ধরে ও এলাকার তাদের একক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইজাজকে মাথায় পিস্তল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য গুলি করে। পুলিশের কাছে দেয়া জয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জালাল হোসেন খোকা এবং জয় খুবই ঘনিষ্ঠ আশরাফুল রহমান ইজাজ তাদের সাথে চলাফেরা করতো তারা একই পাড়ার বাসিন্দা। কলেজ পাড়া এলাকায় এককভাবে প্রভাব বিস্তার করতো জয়। তবে তাদের সব সিদ্ধান্ত ইজাজ ও তার কয়েকজন বন্ধুর প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলো খোকা ও জয। এই বিরোধ আস্তে আস্তে চরমআকার ধারণ করে। জালাল হোসেন খোকা, হাসান আল ফারাবী জয় এবং আরো বেশ কয়েকজন চরম শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২ জুন (রোববার) জেলা শহরের আরেকজনের কাছ থেকে খোকা অস্ত্রটি সংগ্রহ করে জয়কে দেয় এবং ইজাজকে মারার সুযোগ খুঁজতে থাকে। গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষে কলেজপাড়া এলাকায় বিজয় মিছিল করার জন্য ২০ থেকে ২৫ জন লোক জড়ো হয়। এবং সেখানে খোকা জয় এবং ইজাজও ছিলো।খোকার সাথে কোন একটা বিষয়ে ইজাজের তর্কবিতর্কের মাঝে জয় তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে ইজাজকে প্রকাশ্যে সবার সামনে গুলি করে পালিয়ে যায়। প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো বলা হয় মামলার ওপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশেষ শাখার জয়নাল আবেদীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( সদর সার্কেল) মোঃ বিল্লাল হোসেন। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আসলাম হোসেনসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা অবস্থিত ছিলো।
© All rights reserved © 2023
Leave a Reply