1. stbanglatv@stbanglatv.com : stbanglatv : stbanglatv
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakirbd :
দুর্গাপুজায় ঘুষ নিয়ে আনসার সদস্য বাচাই - Stbanglatv.com
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

দুর্গাপুজায় ঘুষ নিয়ে আনসার সদস্য বাচাই

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৪ Time View

 

মোঃ আব্দুল হান্নান নাসিরনগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে শারদীয় দুর্গাপূঁজ মণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় ৮ লাখ টাকার ঘুষ আদায় করেছে একটি চক্র বলে অভিযোগ উঠেছে। এ চক্রের সঙ্গে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা, কর্মচারী ইউনিয়ন দলনেতা দলনেত্রী ও সাধারণ আনসার সদস্যরাও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

এ ছাড়াও বিগত সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্যও সাধারণ আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের তথ্য পাওয়া গেছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ১২৮টি পূজা মণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলায় আনসারদের পিসি, এপিসি ও সদস্য (পুরুষ ও মহিলা) নিয়ে মোট ৮৩২ জন নিয়োজিত রয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে ৬৭২ জন সাধারণ সদস্যকে পূজা মণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ছয় দিনের চাকরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর অধিকাংশ সদস্যকেই তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য ১২শ টাকা করে ঘুষ দিতে হয়েছে।

 

ঘুষ আদায়ের জন্য নাসিরনগর আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের দল নেতা-নেত্রীদের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রতিনিধি। এসব প্রতিনিধির মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থ জমা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দল নেতা-নেত্রীদের হাতে। পরে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ বাটোয়ারা হয় সেই অর্থ। ঘুষ আদায়ের পাশাপাশি আনসার সদস্যদের ভুয়া তালিকা করে অর্থ আত্মসাৎ, ভুয়া বিল প্রণয়ন, অর্থের বিনিময়ে প্রশিক্ষণবিহীন লোক নিয়োগ, একই ব্যক্তিকে একাধিক মণ্ডপে দায়িত্ব প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

 

দাঁতমণ্ডল গ্রামের বাসিন্দা আজহারুল ইসলাম বলেন, আমার গ্রামের (দাঁতমণ্ডল দক্ষিণপাড়া) মধ্যে তিনডা দল আছে, প্রতিটা দলে ২৪ জন করে লোক আছে। একটা দলের দায়িত্বে সড়ক পাড়ার হোসনা, আরেকটা দলের দায়িত্বে খাঁ বাড়ির শাফাউল্লাহ। এরা লোক নিয়া দেয়, বিনিময়ে ১২শ কইরা টেহা নেয়। উত্তর গ্রামেও এমন দুই-তিনডা দল আছে। আমাদের পাড়ার অনেক লোক আছে, যারা টেহা না দেওয়ায় ডিউটিতে যাইতে পারে নাই। যারা টেহা দিছে তাদের ডিউটিতে নিছে। আমাদের গ্রাম থেইক্কা প্রায় লাখখানেক টেহা নিয়া গেছে। আমরা ইডার প্রতিবাদ জানাই।

 

টাকার বিনিময়ে পূজার ডিউটিতে তালিকাভুক্ত হওয়া আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমার কাছ থেইক্কা ১২শ টেহা নিছে ইসলিমা। আমারে কইছে ১২শ টেহা লাগবো, আমি ১২শ টেহা ইলার বাড়িতে নিয়া দিয়াইছি। সবার থেইক্কা নিতাসে, অহন আমারে কইসে নিয়া দিয়া আওন লাগব, আমি নিয়া দিয়াইসি। সবাই দিতাসে অহন আমিও ৩-৪ দিন আগে ১২শ টেহা দিয়া আইসি।

 

নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের আব্দুল ওয়াসিম বলেন, আমি সবসময় আনসারদের ডিউটিতে যাই। গতবার পূজার ডিউটির জন্য ৫শ টাকা নিছে, জাতীয় নির্বাচনে দিছি ১ হাজার। এইবার টাকার জন্য আইসা বলে ১২শ লাগবো। আমি বলছি দিনদিন টাকা বাড়ে কেরে। টাকাও দিতাম না, ডিউটিও করতাম না। ইসলিমা কইসে এইডা অফিসে দেওন লাগে, এরে-ওরে দেওন লাগে।

 

গ্রাম পর্যায়ে টাকা আদায়কারীদের একজন হোসনা বেগম জানান, আমরা টেহা উডাইয়া দলনেত্রী ইসলিমা আফার কাছে দিছি। আমরা গরিব মানুষ, কাজ করে খাই। দলনেত্রী কইছে টাকা তুইল্লা দিতাম, আমি ২৬ জনের টাকা তুইল্লা ইসলিমা আফার কাছে দিছি। এরা সবার কাছ থেইক্কাই টেহা নেয়। মেলা গুরুফ আছে, অন্য গুরুফের ওরাও দেয়। গতবারের পূজায় ৫শ কইরা নিছিলাম। উপজেলা নির্বাচনে ১ হাজার কইরা নিছে, এমপি নির্বাচনে ১ হাজার কইরা নিছিলাম।

 

নাসিরনগর সদর ইউপি দলনেত্রী মোছা. ইসলিমা বেগম জানান, যাদের তালিকায় নাম দিতে পারিনি তারাই এসব বলছে।

 

নাসিরনগর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, এ বছর ১২৮টি পূজা মণ্ডপে আমাদের আনসাররা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমান্ড্যান্ট মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পূজা বাছাইয়ের বিষয়ে শুরুতেই তাদেরকে কঠোরভাবে বলা হয়েছে, কোনো ধরনের লেনদেন যারা করবে এর দায়দায়িত্ব সে বহন করবে। ডিজি মহোদয়ও এ বিষয়ে কঠোর ভাষায় সতর্ক করেছেন। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে এর ব্যবস্থা নেব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

© All rights reserved © 2023

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি