1. stbanglatv@stbanglatv.com : stbanglatv : stbanglatv
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakirbd :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন ও স্যালাইনের চরম সংকট, মানবিক বিপর্যয় চরমে। - Stbanglatv.com
বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৭ পূর্বাহ্ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন ও স্যালাইনের চরম সংকট, মানবিক বিপর্যয় চরমে।

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৯ Time View

 

শেখ সাদী সুমন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন ও স্যালাইনের চরম সংকট, মানবিক বিপর্যয় চরমে

শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন এক মানবিক বিপর্যয়। হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ও জনবল সংকটের সঙ্গে জীবনরক্ষাকারী অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের চরম ঘাটতি যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

তিন গুণেরও বেশি রোগী, এক ইঞ্চি খালি নেই NICU-তে

হাসপাতালের শিশু বিভাগের মোট শয্যা সংখ্যা মাত্র ২৫টি হলেও বর্তমানে সেখানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯ জনে, যা ধারণক্ষমতার প্রায় তিন গুণ। এর বাইরে নতুন করে আরও ৩৫ জন শিশু ভর্তির অপেক্ষায় থাকায় মোট রোগীর চাপ ১০৪ জনেরও বেশি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অস্বাভাবিক চাপ সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠেছে। শিশু বিভাগের ১১ শয্যাবিশিষ্ট নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (NICU)-ও সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ, এক ইঞ্চি খালি জায়গা নেই। ছুটির তুলনায় নতুন রোগীর সংখ্যা বর্তমানে পাঁচ গুণেরও বেশি হওয়ায় বহু শিশু রোগী বেড না পেয়ে তাদের পরিবারের সাথে হাসপাতালের মেঝেতে ও বেডের পাশে মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। ঠাণ্ডা মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার ফলে শিশুদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি আরও বাড়ছে।

৪ জন চিকিৎসকে চলছে পুরো বিভাগ, তীব্র কর্মচাপ

বিশাল সংখ্যক রোগীর এই চাপ সামলাতে ডাক্তার ও নার্সরা তীব্র কর্মচাপের শিকার হচ্ছেন। পুরো শিশু বিভাগের দায়িত্ব পালনের জন্য শিশু কনসালটেন্টসহ মাত্র চারজন চিকিৎসক কাজ করছেন। সীমিত জনবলের কারণে রোগীদের সঠিক মনোযোগ দেওয়া এবং সময়োপযোগী সেবা প্রদান করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, গুরুতর অসুস্থ শিশুদের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের অভাবে পরিস্থিতি যেকোনো মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের চরম ঘাটতি, বিপাকে নিম্ন আয়ের পরিবার

রোগীর চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী ও অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের চরম সংকট। নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার মতো শীতকালীন রোগের চিকিৎসায় অপরিহার্য জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন, স্যালাইন এবং সরঞ্জামাদির কোনো সরবরাহ হাসপাতালে নেই।

বিশেষভাবে ঘাটতি থাকা অত্যাবশ্যক ও জরুরি আইটেমগুলো হলো: Inj. Meropenem, Fluclox, Kacin, Cotson, Baby Saline (Inf.), Electrodex, 10% DA, Microbore Set, I/V Cannula (24), Windel Plus, Bodicort।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক সিরাপের কোনোই সরবরাহ নেই। যা শীতকালে রোগীর চাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে; তাদের পক্ষে ব্যয়বহুল প্রাইভেট চিকিৎসা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক শিশুই প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হওয়ার গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে।

জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে এবং পর্যাপ্ত জনবল ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত না হলে এই শীতে অনেক শিশুর জীবন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় শিশু বিভাগকে কার্যকর, নিরাপদ ও স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

© All rights reserved © 2023

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি