
ব্রাহ্মণবাড়িয়া,থেকে শেখ সাদী সুমন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর হাবিবা আক্তার (৮) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ঘর থেকে ডেকে নিয়ে তাকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শংকরাদহ গ্রামে শিশুটির ঘরের পাশে একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত হাবিবা আক্তার একই ইউনিয়নের হরিণবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং শংকরাদহ গ্রামের মনুস মিয়া ও জহুরা বেগম দম্পতির ছোট মেয়ে।
নিখোঁজ ও মরদেহ উদ্ধার
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে শিশু হাবিবা তার অন্য বোনদের সঙ্গে বসে পড়ালেখা করছিল। এর মধ্যেই কোনো এক ব্যক্তি তাকে ঘর থেকে বের হতে বলে। ঘর থেকে বের হওয়ার পর রাতে আর সে ফেরেনি। পরিবারের সদস্যরা তাকে অনেক খুঁজেও না পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাইকে নিখোঁজের সংবাদ প্রচার করেন।
পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজন ঘরের পাশেই একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে হাবিবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে নাসিরনগর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।
পরিবারের আহাজারি ও বিচারের দাবি
শিশুটির বাবা মনুস মিয়া গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর আমার স্ত্রী ফোন দিয়ে জানায় হাবিবাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আজ সকালে মেয়ের রক্তাক্ত লাশ পেলাম। কে বা কারা এমন নৃশংস কাজ করেছে, তা জানি না। যারা আমার নিষ্পাপ মেয়েকে হত্যা করেছে, আমি তাদের কঠিনতম বিচার চাই।”
হরিপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সজল চন্দ্র দাস এই ঘটনাকে ‘নৃশংস’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “আট বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের দাবি, পুলিশ দ্রুত প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক। এই ঘটনা পুরো এলাকায় শোক ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।”
পুলিশের বক্তব্য
এ বিষয়ে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, “আমরা একটি শিশুর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। সবকিছু গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারব।”
© All rights reserved © 2023
Leave a Reply