1. stbanglatv@stbanglatv.com : stbanglatv : stbanglatv
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakirbd :
গৌরীপুরে কৃষকের একতায় ফসলের সমলয় ॥ বাঁচবে শ্রম-কমবে খরচ-বাড়বে ফলন মেশিনে রোপন হচ্ছে ধানের চারা - Stbanglatv.com
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৬:২১ অপরাহ্ন

গৌরীপুরে কৃষকের একতায় ফসলের সমলয় ॥ বাঁচবে শ্রম-কমবে খরচ-বাড়বে ফলন মেশিনে রোপন হচ্ছে ধানের চারা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫০ Time View

 

আব্দুর রউফ দুদু গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ-

কৃষকের একতায় একসঙ্গে এক মাঠে একই ফসল আর শ্রমিক ছাড়াই মেশিনে জমির চাষাবাদ ও ধানের চারা রোপন হচ্ছে এখন ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের শালিহর গ্রামে ২০২৪-২৫অর্থবছরে রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বোরো ধানের (উফশী জাত) সমলয়ে চাষাবাদের ব্লক প্রদর্শনীর আওতায় এ কর্মসূচির মাধ্যমে শালীহর ব্লকে অর্ধশত কৃষক একসঙ্গে জমি প্রস্তুতকরণ ও ধানের চারা রোপনের উৎসব পালন করেন।

বৃহস্পতিবার এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান। রাইস ট্রান্সপ্লান্টর যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপনের মধ্যদিয়ে এ উৎসব শুরু হয়। উপসহকারী কৃষি অফিসার সুমন চন্দ্র সরকার জানান, কৃষকরা একসঙ্গে একই ফসল করছে। মেশিনে খেত প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন মেশিন দিয়েই চারা রোপন করা হচ্ছে। মেশিনে চারা রোপন করায় চারা আঘাত প্রাপ্ত হয় না, অতিরিক্ত নিচে বা উপরে ভেসে যায় না, নির্ধারত দূরত্বে রোপন করায় খাদ্যেও ভারসাম্য থাকে। একসঙ্গে ফসল করায় রোগ প্রতিরোধ সহজ হয়। এতে ফলন ভালো হয়। রাইস ট্রান্সপ্লান্টরের চালক মো. এমদাদুল হক জানান, প্রতি এক একর (১০০শতাংশ) জমিতে ধানের চারা রোপন করতে দুরত্ববেধে ২হাজার ৫শ টাকা থেকে ৩হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। শ্রমিক দিয়ে এ জমিতে রোপন করলে ৫হাজার থেকে ৬হাজার টাকা কৃষকের খরচ হতো।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন জলি। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. আনিসুর রহমান, মো. রাকিবুল হাসান, উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. শরীফুল ইসলাম, সুখরঞ্জন দাস, সুমন চন্দ্র সরকার, মোক্তাদির হাসান, নাহিদা আক্তার, জাকিয়া জেসমিন, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, কৃষক চান্দেরসাটিয়ার এসএম ইমতিয়াজ হোসেন, শালিহরের মো. সিদ্দিকুর রহমান, মো. মানিক মিয়া, মুনসুর আলী, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

কৃষক মো. রুবেল মিয়া জানান, ধান কাটা ও রোপনে এখন চরমভাবে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এ রাইসট্রান্সপ্লান্টর মেশিন কৃষককে বাঁচিয়েছে। সহজে রোপন, ধান কাটা যাচ্ছে। সমলয় পদ্ধতিতে চারা রোপণ করে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে এবং সুফল পাব আশা করছি।

কৃষক আজহারুল ইসলাম জানায়, বর্তমানে জমিতে চাষাবাদের ক্ষেত্রে শ্রমিক স্বল্পতার কারণে সমলয় চাষাবাদে মেশিনের মাধ্যমে জমিতে ধানের চারা রোপণ করেছি। শ্রমিক খরচ ও সময় সাশ্রয় হয়েছে। এতে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। কৃষক আব্দুর রহিম জানান, আগে জমিতে চাষাবাদের জন্য শ্রমিক নিতে সময় ও খরচ বেশি লাগতো। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সরকারি ধানের বীজ, সার দিয়েছে, এখন মেশিনের মাধ্যমে এক ঘণ্টায় ১ ৩০-৪০শতাংশ জমিতে শ্রমিক চারা রোপণ করে দিচ্ছে। তাই সব দিক দিয়ে আমরা খুশি।

উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন জলি জানান, প্রথমে রাইস ট্রে’র মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা হয়। পরে রাইস ট্রান্সপ্লান্টর যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করে দেয়া হয়েছে। এতে করে কৃষকের বিঘা প্রতি চারা রোপণ করতে ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগছে। মজুরি খরচও কম লাগবে। কৃষকরা অনেক উপকৃত হবে।’

উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. শরীফুল ইসলাম জানান, সারিবদ্ধভাবে ট্রেতে সাজানো ধানের কচি চারা, দেখতে অনেকটা সবুজ কার্পেটের মতো মনে মনে হলেও আসলে তা নয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি ও চারা রোপণ না করে এ পদ্ধতিতে প্লাস্টিকের ট্রেতে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে লাগানো হয় ধানের বীজ। এতে ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা মাঠে লাগানোর উপযোগি হয়ে যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ পদ্ধতিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার না করে সামান্য জৈব সারের ব্যবহারে খরচ কম হয়। প্লাস্টিকের ট্রে-তে বীজতলা করায় ধানের চারা উত্তোলন, রোপণ, ফসল মাড়াই ও সবই একযোগে করা যায়। উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ ব্যবহার করায় ১৪০ থেকে ১৪৫ দিনের মধ্যে ফসল তোলা সম্ভব হয়। এতে ফলন বাড়বে, উৎপাদন খরচ কমবে ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ভরা মৌসুমে ধান কাটার সময় কৃষি শ্রমিকের সংকটের সমাধানই হলো সমলয় চাষাবাদ। এ পদ্ধতিতে বিশেষ অটোমেটিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে ট্রে-তে চারা বপন করা হয়। ট্রে-তে চারা বপন যন্ত্রের ৩টি চেম্বার থাকে। প্রথম চেম্বারে মাটি দেওয়া হয়। মেশিনের মাধ্যমে মাটি সরাসরি ট্রেতে পড়ে। দ্বিতীয় চেম্বারে অঙ্কুরিত বীজ দেওয়া হয়। সেই বীজও মেশিনের মাধ্যমে সঠিক পরিমাণে ট্রেতে পড়ে। তৃতীয় চেম্বারে আবারও মাটি দেওয়া হয়। সেই মাটিও মেশিনের মাধ্যমে বীজসহ ট্রে-তে পড়ে বীজ ঢেকে দেয়। এরপর ট্রেগুলো জমিতে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। মাটি যেন শুকিয়ে না যায়, সেজন্য পানি স্প্রে করা হয়। শীতে চারার যেন ক্ষতি না হয়, সেজন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। চারার উচ্চতা ৪ ইঞ্চি হলে বা চারার বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন হলে তা জমিতে রোপণ করার উপযোগী হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

© All rights reserved © 2023

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি