আবু বকর ছিদ্দিক নোয়াখালী থেকেঃ
সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেই, তবুও প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত উপজেলার বজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বসে অফিস করেন। ভূমি অফিসের অনলাইনের কাজ কম্পিউটারে করেন। ঘুষ ছাড়া ফাইল একচুলও নড়তে দেন না তহসিলদারের পুত্র। উপজেলার বজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তহসিলদার জহিরুল ইসলাম ও তার ছেলে তাসলিমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, তহসিলদার জহিরুল ইসলাম দীর্ঘ ৪ বছর পূর্বে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করেন। সেখানেই যোগদান করে তার ছেলে তাসলিমকে দিয়ে অফিসের টেবিল চেয়ারে বসিয়ে কাজ করাতেন। খাজনা পরিশোধ, নামজারি, বন্দোবস্ত নথিসহ ভূমি সংশ্লিষ্ট কাজে কোন জমির মালিক ভূমি অফিসে গেলেই তিনি তার ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তার ছেলে তসলিম জমির মালিকদের সাথে ঘুষের টাকা লেনদেন করেই তার পিতাকে গ্রিন সিগনাল দিলেই তিনি প্রতিবেদন দাখিল করতেন। এ সংক্রান্ত অনিয়ম বিষয়ে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ করেন। বিগত সময়ে তহশিলদার জহিরুল ইসলামকে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ স্বাক্ষরিত পরিপত্রে এই ভূমি কর্মকর্তাকে এপ্রিল মাসের প্রথমে সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বদলি করেন। এখানে বদলি হয়ে আসার পর ভূমি অফিসের দালালদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে। তহশিলদার ও তার পুত্রের ঘুষ বাণিজ্যের মাত্রা বেড়ে যায়।
উপজেলার পূর্ব চাঁদপুর গ্রামের মৃত রমজান আলীর পুত্র মাস্টার অলি আহমেদ অভিযোগ করে জানান, ২৮ এপ্রিল সকাল ১১ টায় তিনি নাটেশ্বর মৌজার ৪৪ শতাংশের মধ্যে ৪ শতাংশ সম্পত্তির খাজনা পরিশোধ করতে বজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। তহশিলদার জহিরুল ইসলাম তার ছেলে তাসলিমের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। সে প্রথমে ৪ শতাংশ সম্পত্তির খাজনা নিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন। ৪৪ শতাংশ সম্পত্তির খাজনা পরিশোধ করতে বলেন। পরে সে ৪ শতাংশ সম্পত্তির খাজনা নিতে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেন।
২৮ এপ্রিল সকাল ১১ টার দিকে বজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে তফুরা নামে একজনের মালিক অভিযোগ করে জানান, তিনি ১১ শতাংশ সম্পত্তি নামজারি করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এসেছেন। তহশিলদার জহিরুল ইসলাম নামজারি করতে ১৫ হাজার টাকা চুক্তি করেন। পরে কাগজপত্র ও টাকা নিয়ে আসবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনাপুর ইউনিয়নের কয়েকজন জমির মালিক অভিযোগ করে জানান, বিগত ৪ বছর এই ভূমি অফিসে তহসিলদার জহিরুল ইসলাম ও তার ছেলে বিভিন্ন অনিয়ম করেছে। তাদের ম্যানেজ করেই সরকারি সম্পত্তি দখল করেছে ভূমিদস্যরা। তহশিলদার তার ছেলের মাধ্যমেই ঘুষের টাকা নিয়ে থাকেন।
বজরা ইউনিয়ন তহশিলদার জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেক ভূমি অফিসে বহিরাগত লোকজন দিয়ে কম্পিউটার কাজ করে থাকেন।ইউএনও এসিল্যান্ড বিষয়টি জানেন। তিনি তাঁর পুত্রকে দিয়ে করাচ্ছেন। তবে তিনি তার মাধ্যমে কোন ঘুষের টাকা লেনদেন করছেন না।
সোনাইমুড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দ্বীন আল জান্নাতের বক্তব্য নিতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দিলেও পাওয়া যায়নি।
© All rights reserved © 2023
Leave a Reply