নেত্রকোনা প্রতিনিধি
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে এক শ্রেণির লোকেরা ভাংচুর জ্বালাও পোড়ানোর মতো ঘটনা ঘটতে থাকলে দেশের জনগণের জান মাল রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায়। সমাজের পরিবেশ সুন্দর রাখতে বা থাকতে আপনার নেতৃত্বে আজকে সেনাবাহিনী টহল জোরদার করা হয়েছে। আপনার এরকম দ্রুত মহতি এবং সাহসী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। মানুষ জানে দেশের সকল বিপদে সেনাবাহিনী সবসময় পাশে থাকে। আজকে ও দেশের জনগণ সুফল পাচ্ছে। অভিনন্দন।
জনাব, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গত পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে একটানা দেশ পরিচালনা করে আসছে। আর এই একক ভাবে দির্ঘদিন দেশ পরিচালনা করার ফলে দেশের মাত্র পনেরো শতাংশ লোক আজকে তাদের ছত্রছায়ায় থেকে তারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। অন্য দিকে মধ্যবিত্ত হয়েছে গরিব। আর গরিব হয়েছে নিঃশ্ব।
জনাব, আমরা যখন মিডিয়ার মাধ্যমে শুনতে পাই দেশের একমাত্র সেনাবাহিনী ছাড়া দেশের সকল সরকারি কর্মকর্তারা একযোগে ঘুষ খেতে শুরু করেছে। এমনকি কেউ কেউ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। যখন শুনি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে গেছে। দেশের একেকজন এমপি মন্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে তিনশত গুণ থেকে হাজার গুণ। কারো তারচেয়েও বেশি।
দেশের মানুষ সঠিক স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে না। ঘুষ ছাড়া সরকারি কোনো সেবা পাচ্ছে না। সারাদেশ আজকে মাদকে সয়লাব। চারদিকে কিশোর গ্যাং। প্রতিনিয়ত খুন ধর্ষণ চুরি ডাকাতি প্রতারণা সহ হাজারো সমস্যায় দেশের সাধারণ মানুষেরা যেন নাজেহাল।
দেশের কারো কাছে কোনো সহযোগিতা তো দূরের কথা। মনের একটি বিষদ বিবরণ বলার মতো একটা জায়গায় নেই অনেকের। এর মধ্যে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে নিত্য পণ্যের দাম। দেশের গোটা সরকার যেন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। গত পনেরো বছরে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হতে হতে কোনো পণ্যের মূল্য হাজার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যপারে সরকারের পক্ষ কোনো মন্তব্য করছে না কেউ। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও না।
জনাব, আপনি সেনাবাহিনী প্রধান তাই আপনার কাছে প্রশ্ন রাখলাম। আপনারা দেশ রক্ষার দায়িত্বে আছেন। আজকে আপনারা ব্যারাকের বাহিরে এসে দেশ রক্ষার কাজে নিয়োজিত হয়েছেন ভালো কথা। তাহলে প্রতিদিন সিন্ডিকেট ধারা সমগ্র জাতি আজকে শোষিত। সরকারি সকল কর্মকর্তাদের কাছে শোষিত। দলীয় নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি করে তাদের কাছে এক শ্রেণি শোষিত। তখন কেন মাঝে মাঝে আপনারা জনগণের পক্ষ নিয়ে ব্যারাকের বাহিরে একটু আসলেন না।
আপনারা হয়তো জানেন না। এই দেশের সাধারণ জনগণ আপনাদের কে কত শ্রদ্ধা কত সম্মান করে। জনগণ দেশের বিভিন্ন চায়ের দোকানে বসে আফসোস করে আর বলে আরে সরকারি কর্মকর্তারা যে ঘুষ খাচ্ছে। দেশের মাদক বন্ধ করতে। দেশের সিন্ডিকেটদের উচিৎ শিক্ষা দিতে। দেশের চাঁদাবাজি। জলদস্যু বনদস্যুদেরকে প্রতিহত করতে মাঝে মাঝে যদি সেনাবাহিনী অভিযান দিত তাহলে দেশটা আরো ভালো চলত ।
কিন্তু আজকে ব্যারাকের বাহিরে যে সেনাবাহিনী আপনার নেতৃত্বে মানুষের জান মালের নিরাপত্তা দিতে সরকারি সম্পদ রক্ষা করতে এসেছে। আজকে বিষয়টি দেশের সিংহভাগ মানুষ অপছন্দ করছে। তার কারণ হলো আপনারা তো এর আগে পরে দেশের আরো বড় বড় ঘটনা ঘটেছে। কৈ তখন তো জনগণ আপনাদের কোন ভূমিকা দেখেনি। তাই এখন ত্রিমুখী সমালোচনা চলছে সরগরম।
আশা করি ভবিষ্যতে দেশের স্বার্থে দেশের জনগণের স্বার্থে বিভিন্ন অসুন্দর বিষয় গুলো চিহ্নিত করে মাঝে মাঝে সেনা অভিযান দিবেন। এই প্রত্যাশা রইল।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিষ্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী
2 আগষ্ট 2024 মোহাম্মদপুর ঢাকা থেকে।
© All rights reserved © 2023
Leave a Reply