1. stbanglatv@stbanglatv.com : stbanglatv : stbanglatv
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakirbd :
আজ ৮ডিসেম্বর গৌরীপুর মুক্ত দিবস  - Stbanglatv.com
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন

আজ ৮ডিসেম্বর গৌরীপুর মুক্ত দিবস 

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮২ Time View

 

আব্দুর রউফ দুদু গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ-

আজ ৮ ডিসেম্বর গৌরীপুর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১সালের এই দিনে এদেশের মুক্তিকামী দামাল মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাজিত করে গৌরীপুরের আকাশে উড়িয়েছিল লাল সবুজ আর মানচিত্র খচিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। রক্ত ঝরা ৯ মাসের য্দ্ধু শেষে বিজয়ের উল্লাসে মেতে উঠেছিল গৌরীপুরবাসী। দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিজয় মিছিল, শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এছাড়াও যুগান্তর স্বজন সমাবেশ, উপজেলা প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবস পালনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

১৯৭১’র ৭মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে গৌরীপুরবাসী উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেন। স্থানীয় প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য মরহুম হাতেম আলীর নেতৃত্ব সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। গৌরীপুর কলেজ ও রাজবাড়ীতে স্থাপন করা হয় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। ছাত্র যুবকরা ক্যাম্পে এসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করে। সাবেক সেনা সদস্য মোমতাজ উদ্দিন ও আক্কাছ আলী ক্যাম্প দুটিতে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।

২৩এপ্রিল হানাদার বাহিনী বিমান থেকে মেশিন গানের গোলা বর্ষণ ও রেলপথের ভারী অস্ত্রে হামলা চালিয়ে গৌরীপুর শহর দখল করে নেয়। হাদানার বাহিনীর ভারী অস্ত্রের মুখে টিকতে না পেরে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে যায়। শহর দখলের সময় হানাদারা কালীপুর মোড়ে স্কুল শিক্ষক নরেন্দ্র্্র বিশ্বাসকে গুলি করে হত্যা করে। হানাদাররা শহরে ঢুকে তাদের দোসরদের সহযোগীতায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় গৌরীপুর ছিল ১১নং সেক্টরের অধীনে। এই সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার তোফাজ্জল হোসেন চুন্নুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়পুর, চারুয়াপাড়া বিওপি, কমলাকান্দা, ফুলপুর, গৌরীপুর, কলসিন্দুর, পুর্বধলা, ময়মনসিংহ, নান্দাইল, ঈশ্বরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে। কোম্পানী কমান্ডার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি প্লাাটুনে বিভক্ত হয়ে ময়মনসিংহ সদর, ঈশ্বরগঞ্জ, গৌরীপুর সহ দেশের বিভিন্ন রনাঙ্গনে যুদ্ধ করে।

দেশকে স্বাধীনতা ও গৌরীপুরকে হানাদার মুক্ত করতে দেশের বিভিন্ন রনাঙ্গনে মতিউর রহমান, আনোয়ারুল হক, সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুল হাই, হাতেম আলী, আফাজ উদ্দিন, জসীম উদ্দিন, আনোয়ারুল ইসলাম, মঞ্জু, সিরাজুল হক, আব্দুল মতিন, ও সুধীর বড়ুয়া শহীদ হন।

১৯৭১’র মে মাসে মুক্তিযোদ্ধারা বিস্ফোরক পদার্থ দিয়ে গৌরীপুরের টেলিফোন একচেঞ্জ, রেলস্টেশন উড়িয়ে দিয়ে হানাদাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত করে। ৩০নভেম্বর গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম পলাশকান্দায় মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) কমান্ডার মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এ’যুদ্ধে হানাদারদের মেশিন গানের গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন মুক্তিযোদ্ধা জসীম। আহত অবস্থায ধরা পড়েন সিরাজ, মঞ্জু ও মতিন। হানাদাররা তাদেরকে ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে বেয়নেট দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলে দিযে খুচিয়ে খুচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।

ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ। মুক্তিযোদ্ধাদের চোরাগুপ্তা হামলায় হানাদার বাহিনী তখন দিশেহারা মুক্তিযোদ্ধারা গৌরীপুরকে হানাদার মুক্ত করতে চারদিকে থেকে ঘেরাও করে ফেলে। ফিল্ড অপারেশান কমাণ্ডার রুস্তম আলী কনু মিয়া, সোহরাব ও ছোট ফজলুর নেতৃত্বে জ্বালিয়ে দেয়া হয় টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ও রেলওয়ের টেলিগ্রাফ অফিস। মুক্তিযোদ্ধাদের এ অবস্থানের খবর পেয়ে হানাদাররা তাদের শহরের ক্যাম্প গুটিয়ে রাতের আঁধারে ময়মনসিংহ শহরে পালিয়ে যায়। রেখে যায় তাদের দোসর রাজাকার ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের। ৮ডিসেম্বর রাজাকার ও পুলিশরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা লাল, সবুজ আর মানচিত্র খচিত বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

© All rights reserved © 2023

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি