লিয়াকত হোসেন জনী , মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
বাঁচবে খরচ ও সময় এবং বৃদ্ধি পাবে উৎপাদন মাত্রা । বিনা চাষের এ প্রযুক্তি তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়তে ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে সহনায়ক হবে। কম খরচে সময় অপচয় রোধের এ প্রযুক্তি ও পদ্ধতি কৃষক পর্যায়ে সফলতা পেলে আগাম জাতের সরিষা চাষের পর বোরো আবাদে এগিয়ে যাবে কৃষক।
ধান কাটার এক সপ্তাহের আগেই পাকা ধানের জমিতে সরিষার বীজ ছিটিয়ে সোনালী ধান কেটে নেয়ার এমন সুযোগ পেয়ে খুশি কৃষকরা। যেখানে ধান কাটার ১০ থেকে ১৫ দিন সরিষার চাষ হতো সেখানে দুই সপ্তাহ আগেই বীজ বপনের এমন পদ্ধতি অনেকেই বেছে নিচ্ছে।
আর কৃষি বিভাগ বলছে বিনা চাষে সরিষা চাষে কৃষক পর্যায়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। আগাম জাতের সরিষা আবাদের এ পদ্ধতি সফল হলে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি কমবে আমদানি নির্ভরতা এমনটাই জানালেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৪১০ জন কৃষক নতুন এ প্রযুক্তিতে বিনা চাষে সরিষা আবাদ শুরু করেছে। তারা ধানের জমিতে বীজ ছিটিয়েছে। ১০৫ হেক্টর জমিতে বিনা চাষে সরিষা আবাদ করা হচ্ছে বলে কৃষি বিভাগ জানায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে এখনো সোনালি পাকা ধান। সোনা রঙের পাকা ধান যেন চোখ জুড়ানো? কাটা শুরু হতে এখনও কয়েকদিন বাকি। পাকা ধানের জমিতে সময় ও অর্থ বাঁচাতে ছিটানো হচ্ছে বিনা ৯ জাতের আগাম সরিষার বীজ। জমি থেকে ধান কেটে মাঠ খালি করার পর সরিষা গজিয়ে উঠবে। সপ্তাহ ১০ দিন আগেই বীজ বপনের এমন বিনা চাষে সরিষার আবাদের সুযোগ গ্রহন করছে কৃষকরা।
এমন বিনা চাষে সরিষা আবাদে শালিখা গ্রামের ১৫ জন কৃষক তাদের জমিতে ধান রেখেই ছিটিয়েছে বলে জানিয়েছে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। স্থানীয় মনে করছেন, এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন হলে বাড়বে তেল জাতীয় ফসলের চাষ ও বাড়বে উৎপাদন। কমবে তেল জাতীয় ফসলের আমদানি নির্ভরতা।
স্থানীয়রা কৃষকরা জানালেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমানের পরার্মশে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় কেউ ৪০ শতাংশ, কেউ ৩০ শতাংশ, কেউ দুই বিঘা এ ভাবে ১৫ জন কৃষক এ প্রযুক্তিতে বিনা চাষে প্রথম বারের মতো সরিষার আবাদ শুরু করেছে। তাদের মতে, এ ভাবে সরিষা চাষ করতে পারলে সময় অপচয় রোধ হবে। আবার কম সময় আগাম জাতের সরিষা পাওয়া যাবে। এ সাথে দুটি ফসলের চাষ করার প্রযুক্তি এ বছর সফল হলে আগামীতে আরো চাষ বাড়বে। লাভবান হবে তারা এমনটাই ধারণা তাদের। মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষি রকিব আল রানা বলেন, উপজেলায় এ বছর ২ হাজার ৬শ্ব হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত ৪১০ জন কৃষক নতুন এ এ প্রযুক্তিতে প্রযুক্তিতে ১১৫ হেক্টর জমিতে বিনা চাষে সরিসা আবাদে বীজ রোপন করেছে। এ প্রযুক্তি সফল হলে আগাম জাতের বিনা ৯ সরিষা কর্তন করে বোরো চাষ করা যাবে। এতে সরিষা উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কম সময়েই বোরো চাষ করা সহজ হবে। তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে আমদানি নির্ভরতা কমানো যাবে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।
© All rights reserved © 2023
Leave a Reply