এম আর সজিব স্টাফ রিপোর্টার:
সেমিনারে ৭ দফা প্রস্তাবনা পেশ
জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে সর্বতোভাবে ইসরাঈলকে বয়কটের ডাক ওলামায়ে কিরামের। ফিলিস্তিনে ইতিহাসের নিকৃষ্ট অপরাধ সংগঠিত করে চলেছে ইসরায়েল। যা মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। তাই মত পথ নির্বিশেষে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের পক্ষে এবং দখলদার ইসরাইয়েলের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানানো সকলের ঈমানী ও মানবিক দাবি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় ওলামায়ে কেরাম।
আজ ২৩ নভেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বকীয়তা রক্ষা ও দখলদার ইসরাইলী বর্বতার প্রতিবাদে মুসলিম উম্মাহর করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান পীর সাহেব দেওনা, বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুর রহমান, দেশের বাহির থেকেও বিভিন্নভাবে যুক্ত হয়েছেন কয়েকজন সম্মানিত অতিথি। গুগল মিটে লাইভ বক্তব্য রাখেন ফিলিস্তিন ওলামা পরিষদ প্রধান ড. নওয়াফ তাকরুরি, অডিও বার্তা প্রেরণ করেন ভারত দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মাওলানা আবুল কাসেম নোমানী ও পাকিস্তান ওলামায়ে কিরামের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব মাওলানা ইলিয়াস গুম্মান।
ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন শায়খ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, পটিয়ার মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা জোনায়েদ আল হাবীব, বরিশাল মাহমুদিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, বনশ্রী মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ এর উপষ্টো মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আল মোবারক, জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরসার মুহতামিম মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদি, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ, বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা ড. বেলাল নূর আজীজি, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও ধর্মীয় আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার, শাহ আহমদ শফি সাহেব রহ. এর সাহেবজাদা মাওলানা আনাস মাদানী, আফতাব নগর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদ আলী কাসেমী, চিন্তক আলেম মুফতি লুৎফর রহমান ফরায়েজী, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও ধর্মীয় আলোচক আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান, বাংলাশে খেলাফত মজলিস এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, বাহাদুরপুরের পীর মাওলানা হানযালাহ, যুব নেতা আতিকুর রহমান মুজাহিদ ও ছাত্র নেতা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ।
সেমিনার সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করীম আবরার, মুফতি শামসুদ্দোহা আশ্রাফি, মাওলানা ইসমাইল সিরাজী আল-মাদানী, মফতি আবদুল আজিজ কাসেমী।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ লেখেন কবি লেখক ও গবেষক শায়খ মূসা আল হাফিজ। প্রবন্ধ পাঠ করেন মাওলানা নূরুল করীম আকরাম।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষকে আর্থিক সহায়তা করা ও মুজাহিদ বাহিনী পাঠানোর ব্যবস্থাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা উচিত। তিনি বলেন, ইঙ্গ-মার্কিনের সহযোগিতায় জারজরাষ্ট্র ইসরায়েল ফিলিস্তিনে ইতিহাসের জঘন্য বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে। মুসলিমবিশ্বকে সম্মিলিতভাবে ইসরায়েলকে রুখে দিতে হবে। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ইসলামশূণ্য নতুন শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে মেধাশূণ্য করার পায়ঁতারা করছে। দেশের অভিভাবকগণ এই কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে মাঠে নেমেছে। অভিভাবকগণ তাদের আদরের সন্তানদেরকে নিয়ে চরমভাবে উদ্বিগ্ন। এমতাবস্থায় দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চিন্তা চেতনা অনুযায়ী নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নের দাবি জানান। তিনি জাতিসত্তাবিরোধী শিক্ষাকারিকুলামের বিরুদ্ধে সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রতিটি মুসলমান বায়তুল মুকাদ্দসকে হৃদয়ে ধারণ করেন। কাজেই মানবতার দুশমন ইসরায়েল মুসলমানের হৃদয় থেকে মসজিদুল আকসার ভালবাসা মুছে দিতে পারবে না।
বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক ইসরাইয়েলের পণ্য সর্বতোভাবে বর্জনের লক্ষে ক্যাম্পেইন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইসরাইয়েলের মুসলিম জাতিসত্তাবিরোধী ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড রুখে দিতে হবে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলী হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশে কার্যকর কোনো প্রতিবাদ না হলেও এখন দেরিতে হলেও তা শুরু হয়েছে। তবে এ আন্দোলন আরও জোরালো করতে হবে। ফিলিস্তিনী পণ্য বয়কটের ব্যাপারে এক বিন্দু দ্বিধা করার কোন সুযোগ নেই।
জাতীয় সেমিনারের ৭ দফা ঘোষণা পাঠ করা হয়। যা নিম্নরূপ :
১. মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসার হেফাজত এবং সন্ত্রাসী দখলদার ইহুদিবাদী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের কবল থেকে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি উদ্ধারের জন্য বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
২. মুসলমানদের পবিত্র স্থাপনা এবং পবিত্র ভূমিসমূহ সুরক্ষার জন্য বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলির সমন্বয়ে সম্মিলিত সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৩. আজকের সেমিনার বাংলাদেশের সর্বস্তরের ওলামা মাশায়েখ এবং বাংলাদেশের প্রিয় মানবতাবাদী গণমানুষের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের গাজ্জায় বর্বর ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং গাজ্জার হামাস সহ সকল প্রতিরোধ যোদ্ধার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করছে।
৪. আজকের সেমিনার ইহুদীবাদী ইজরাইলের অর্থনৈতিক স্বার্থে আঘাত হানতে সকল ইসরাইলি ও ইহুদী পণ্য বর্জন করার জন্য বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে দেশের সকল ওলামায়ে কেরাম এবং মসজিদের ইমাম খতিবগণকে মস